গত বুধবার রাতে মা গুলজান বানু কে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ছেলেরা পরে শুক্রবার রাতে তাকে বগুড়া শহরের তাজমা সিরামিক ফ্যাক্টরির সামনে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। কর্মক্ষম তিন ছেলে হজরত, হোসেন, মোহাম্মদের সাথে নিজ বাড়ি গাবতলি উপজেলার তিওর গ্রামে থাকতেন গুলজান বিবি।
বিয়ে দিয়েছেন এক মেয়েকে। দিন মজুর স্বামী আর তিনি অভাব-সংকটে কষ্ট করে বড় করেছেন সন্তানদের। ছেলেদেরো হয়েছে সংসার। গুলজান জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই ছেলেরা তাকে ঠিকমতো খেতে দিতো না। অসুখ-বিসুখে তিনি পাননি কোন চিকিৎসা। জীবন বাঁচাতে তাই বেশ কিছুদিন ধরেই ভিক্ষাবৃত্তি করে নিজের আহার গোছাতে হতো। কিন্তু মায়ের ভিক্ষাবৃত্তি পছন্দ নয় ছেলেদের। তাই, প্রায়ই শারীরিকভাবেও আঘাত করতো তারা। সবশেষে দু’দিন আগে দুই ছেলে তাদের মাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিলে রাস্তায় রাস্তায় দিন কাটছে গুলজানের।
গাবতলি থেকে তিনি বগুড়ার শহরের কলোনী এলাকার তাজমা সিরামিক ফ্যাক্টারির সামনে এক যাত্রী ছাউনিতে অবস্থান করছে বৃহস্পতিবার থেকে। সেখানেই শুক্রবার রাতে জরাজীর্ণ এক ব্যাগে কাপড়চোপড় সহ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা বগুড়া সদরের ইউএনও কে খবর দিলে তিনি ছুটে আসেন। পরে বিস্তারিত শুনে, গুলজান বানুকে বাড়ি ফিরতে চান কিনা জিজ্ঞেস করলে ‘কান্না জড়ত
গলায় তিনি বলেন, ‘ছেলেদের ভয় লাগে’।
এ অবস্থায়, ইউএনও সমর কুমার পাল রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যান সদর উপজেলা পরিষদে তার বাসভবনে। তিনি জানান, বৃদ্ধা মায়ের শরীরে মারপিটের ক্ষত আছে। তার প্রাথমিক চিকিৎসা, খাবার এবং রাতে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। শনিবার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থার কথাও বলেন ইউএনও।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা গুলজান বানুর ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
Leave a Reply