1. admin@sylheterkujkhobor.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

ভারতে পেটের ব্যাথার চিকিৎসা করাতে গিয়ে কিডনি হাওয়া

সিলেটের খোঁজখবর
  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৯৭ বার পঠিত

ডেস্কঃ কোনোভাবেই কমছিলো না পেটের ব্যথা। শহর-গ্রাম নানা জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে পাননি সুফল। এ অবস্থায় আব্দুল কাশেমের (৩৪) কাছে খবর আসে, ভারতে গেলে ভালো চিকিৎসা মেলে। তাও আবার কম খরচে। শেষপর্যন্ত যান ভারতে। সেখানে চিকিৎসা তো দূরের কথা, উল্টো খুইয়ে আসেন নিজের কিডনি।

দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে আজ করুণ অবস্থা আব্দুল কাশেমের। গত বছরের (২০২১ সাল) ৪ নভেম্বর ভোরে দালালের মাধ্যমে স্ত্রী ববিতাকে নিয়ে যশোর বর্ডার দিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন কাশেম।

ভারতে নিয়ে চিকিৎসার নামে জিম্মি করে কিডনিসহ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতারের পর বেড়িয়ে আসে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এ ঘটনায় ঢাকার আশুলিয়া থেকে মোছা. বিউটি বেগম নামে চক্রের নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি মেডিকেল ডকুমেন্ট ও একটি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৪ এপ্রিল) র‌্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (অপ্স. ও ইন্ট. শাখা) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস এ তথ্য জানান।

গ্রেফতার এই নারী মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রয়কারী প্রতারক চক্রের সদস্য।

আশুলিয়া থানায় করা একটি মামলা সূত্রে ভুক্তভোগী আব্দুল কাশেমের তথ্য মেলে। তার বাড়ি জয়পুরহাটে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর রাতে আব্দুল কাশেম ও তার স্ত্রী ববিতা দালাল চক্রের সদস্য বিউটি বেগমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। তখন বিউটি তাদের নিজ বাসায় ডাকেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, পরদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিউটির বাসায় যান কাশেম ও তার স্ত্রী। আলাপ-আলোচনার একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কাশেমকে ভারতে নিয়ে সুচিকিৎসা দেওয়ার প্রলোভন দেখান বিউটি। ভারতে কয়েকবার আসা-যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বিউটি তাদের জানান, বিভিন্ন লোককে ভারতে নিয়ে কম খরচে চিকিৎসা করিয়ে সাহায্য করেছেন। তার পাসপোর্ট ও বিভিন্ন কাগজপত্রও তিনি দেখান।

বিউটির কথামতো কাশেম ও ববিতা পাসপোর্ট-ভিসা করে গত বছরের ৪ নভেম্বর যশোর বর্ডার দিয়ে ভারত যান। সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা চক্রের পলাতক সদস্য মো. শহীদ (৪৫) ও শেখ ফরিদ (৪২) তাদের নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখেন। সেখানে থেকেই কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে কাশেমকে নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়।

চিকিৎসার নামে কৌশলে কাশেমের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় কিডনি দানের সম্মতিপত্রে সই নেন চক্রের পলাতক সদস্যরা। পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার কথা বলে তাকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে আব্দুল কাশেমের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর অপারেশন করতে হবে বলে জানানো হয়। এর কয়েকদিন পর ওই হাসপাতালের একটি রুমে তাকে একা নিয়ে অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়।

অপারেশন শেষে জ্ঞান ফেরার পর পেটের বাম পার্শ্বে কাটা দেখে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করে কাশেম জানতে পারেন, তিনি তার কিডনি স্বেচ্ছায় দান করেছেন। পরে তিনি চক্রের সদস্যদের কাছে কিডনি বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা ভয়ভীতি দেখান। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি কাশেম ও তার স্ত্রী ববিতাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, পরস্পর যোগসাজশে ভুক্তভোগী কাশেমকে চিকিৎসার নামে ভারতে নিয়ে অনুমতি ছাড়া তার বাম পার্শ্বের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছে চক্রটি। তিনি বাংলাদেশে এসে বর্তমানে সুচিকিৎসা না পেয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর










x