ডেস্ক: সিলেটে জামায়াত-বিএনপি ঘরনার অর্ধ শতাধিক সাংবাদিকের গতিবিধি ও কর্মকাণ্ডের দিকে নজরদারি শুরু হয়েছে।সেইসঙ্গে তাদের অতীত রাজনৈতিক অবস্থান, কর্মস্থল ও সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এবং ঘন ঘন বিদেশ সফর সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন গোয়েন্দারা।
সিলেট প্রেসক্লাবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘সাংবাদিক-পেশাজীবী সমাবেশ’র পর আয়োজক সংগঠনসহ তাদের মতাদর্শের সাংবাদিকদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে শুরু করে একটি গোয়েন্দা সংস্থা।সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, গত ২৫ জুলাই দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (এসএমইউজে) উদ্যোগে সুবিদ বাজারস্থ সিলেট প্রেসক্লাবের আমীনূর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘সাংবাদিক-পেশাজীবী সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদের সাবেক সহকারি সম্পাদক মো. আমজাদ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আমারদেশের সাবেক জেলা প্রতিনিধি খালেদ আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘সাংবাদিক-পেশাজীবী সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি এম আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের কেন্দ্রীয় মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন ও সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম, সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের সাবেক আমির ও ইবনে সিনা হাসপাতালের সিলেট’র চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান, সম্মিলিত পেশাজীবী এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক বিএনপি নেতা ডা. শামীমুর রহমান, ডা. মোজাম্মেল হক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোজাম্মেল হক, শাবিপ্রবির শিক্ষক প্রফেসর ড. আশরাফ উদ্দিন, সিলেট মহানগরী বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম ও সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আশিক উদ্দিন আশুক।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকার সাবেক বার্তা সম্পাদক আবদুল কাদের তাপাদার।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি ও দৈনিক সিলেটের ডাকের সাবেক স্পোর্টস রিপোর্টার বদরুদ্দোজা বদর ও সহ সাধারণ সম্পাদক দৈনিক খবরপত্রের সিলেট প্রতিনিধি এম এ মতিন, দৈনিক সিলেটের ডাকের প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের, সাবেক ডেপুটি চিফ রিপোর্টার অ্যাডভোকেট মো. তাজ উদ্দিন, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান কবির আহমদ, দক্ষিণ সুরমা সুরমা প্রেসক্লাব সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদ প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম ইমরান, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি (বহিস্কৃত) ও দৈনিক জালালাবাদ/নয়াদিগন্ত প্রতিনিধি তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ ও কোম্পানীগঞ্জ সভাপতি ও দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি সাব্বির আহমেদ প্রমুখ।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী কমিটিতে আছেন ডেইলি নিউ নেশনের সাবেক সিলেট ব্যুরো প্রধান ও শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক, দৈনিক সিলেটের ডাকের চিফ রিপোর্টার সিরাজুল ইসলাম, ডেইলি নিউ নেশনের সিলেট ব্যুরো প্রধান শফিক আহমদ শফি, দৈনিক নয়াদিগন্ত প্রতিনিধি আফতাব উদ্দিন, দৈনিক ইনকিলাব প্রতিনিধি ফয়সাল আমীন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক সিলেটের সময়’র প্রধান আলোকচিত্রী ও প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, দৈনিক জালালাবাদের সাংবাদিক হুমায়ুন কবির লিটন প্রমুখ।
এদের মধ্যে দু’জন সাংবাদিক বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ও জড়িত থাকলেও অন্যরা ছাত্রশিবির ও জামায়াতের ঘরণার।এদের অনেকেই ছাত্রজীবনে ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল পদে ছিলেন।সাম্প্রতিকালে এদের একজন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও নাম লিখিয়েছেন।তবে, ওই সাংবাদিক যুক্তরাজ্য শাখা আওয়ামী লীগের কমিটিতে কিভাবে কার মাধ্যমে অন্তর্ভূক্ত হলেন তা নিয়েও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
এছাড়া সিলেটে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ৩০/৩৫জন সাংবাদিক রয়েছেন, যারা জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত।এদের অনেকেই আবার আওয়ামী লীগ ও এর সংযোগি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে।তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড এবং গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।কয়েকজন সাংবাদিক ঘন ঘন দেশের বাইরে যাচ্ছেন।এসব সাংবাদিকদের আয়ের উৎস, বিদেশে গিয়ে দেশবিরোধী কোনো চক্রান্তে জড়িত হচ্ছে কি না-সে ব্যাপারেও খোজখবর নেয়া হচ্ছে।
Leave a Reply