1. admin@sylheterkujkhobor.com : admin :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন

সিলেটে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, থামাতে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক নিহত

সিলেটের খোঁজখবর
  • আপডেট সময় : সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২
  • ২৮৪ বার পঠিত
ডেস্কঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। টানা ১০ ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে সোমবার সকালে এক মাদরাসাশিক্ষক নিহত হয়েছেন।

নিহত মাদরাসাশিক্ষক হাফিজ সালেহ আহমদ (৪৫) স্থানীয় হেমু গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সিলেট নগরের মেজরটিলা তাহফিজুল কোরআন মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

এছাড়া সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয়পক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আলাউল (১৭), নাজিম উদ্দিন (৩৮), ফখরুল ইসলাম (২২), সহিদ আহমেদ, ফয়সাল আহমদ (২৫), সাজন মিয়া (২৩), আব্দুল জব্বার (৩৮) নাজিম (৩৮), সালেহ আহমদ, হানিফ আহমদ (১৮), সালমান আহমদ (১৮), করিম আলি (৪০), ইমরান আহমদ (২৭), আনোয়ার হোসেন (৩৫) ও রফিক আহমেদ (৫৫) গুরুতর আহত হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার এবং বাজারে জায়গা ক্রয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় হাদপাড়া ও শ্যামপুর গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

রোববার রাত ১০টায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ থেমে থেমে চলে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত। সিলেট থেকে অতিরিক্ত র্যাব-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সোমবার সকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও হাদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিক আহমদ এবং জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে রোববার তারাবির নামাজের পর উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে রাত ১০টার দিকে হাউদপাড়া ও শ্যামপুর গ্রামবাসী হরিপুর বাজারে সংঘর্ষে জড়ান। সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ। এসময় আশপাশের গ্রাম থেকে মুরুব্বি ও পুলিশ এসে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করেন। সংঘর্ষে থামাতে দফায় দফায় মধ্যস্থতাকারীরা চেষ্টা চালান।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে সংঘর্ষ থামাতে মাওলানা সালেহ আহমদসহ স্থানীয় মাদরাসার আলেমদের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে যান। অন্যদিকে, পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে সবাই দিকবিদিক ছুটতে থাকেন। একপর্যায়ে সালেহ আহমদ মাটিতে পড়ে যান। তখন হাদপাড়া গ্রামের লোকজন সালেহ আহমদকে ধরে নিয়ে গিয়ে পিঠিয়ে হত্যা করে। পরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে রাতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। সকাল ৮টায় তিন শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের কারণে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের যান চলাচল প্রায় ১১ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে সোমবার সকাল ১০টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিপামনি দেবী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা আলা উদ্দিন প্রমুখ।

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ বলেন, খবর পাওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাই। সকাল ৮টায় হরিপুর বাজার এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নিই। এ ঘটনায় একজন মধ্যস্থতাকারী নিহত এবং পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান বলেন, পুলিশ আনুমানিক তিনশো রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। ১৭ জন গুরুতরসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। তবে এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর










x