দু’দিন ধরে কোরবানির পশু কেনার চেষ্টা করছিলেন গৃহিণী সাজনা বেগম। সিলেট নগরীর প্রধান পশুহাট কাজীরবাজারসহ অস্থায়ী হাটেও দরদাম করেছেন। পছন্দের পশু হাটে উঠলেও দাম বেশি হওয়ায় কিনতে পারছিলেন না। অবশেষে বৃহস্পতিবার সীমান্তবর্তী উপজেলা জৈন্তাপুর থেকে তিনি গরু কেনেন। ৭০ হাজার টাকায় কেনা গরুটির দাম সাইজের তুলনায় বেশি বলে জানান সাজনা। তাঁর কথার সত্যতাও মিলল গতকাল কয়েকটি বাজার পরিদর্শন ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে।
নগরীর প্রধান কাজীরবাজার ও অস্থায়ী হাট টুকেরবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জাতের পশু হাটে উঠলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। পাশাপাশি দামও বেশি চাওয়া হচ্ছে।
কাজীরবাজারে ১১টি গরু নিয়ে আসা পাইকার নুরুল আলম জানান, বন্যার কারণে পশু রাখার স্থানের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। খামারি থেকে শুরু করে কৃষকরা গরুর খাবার সংগ্রহ করতেও হিমশিম খাচ্ছেন। গোখাদ্য ভুসি এবং খৈলের দামও বেশি।
কাজীরবাজার ছাড়াও সিলেট সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী ছয়টি হাটসহ জেলায় এবার বসেছে ৫১টি পশুহাট। তবে নগরীতে অনুমোদিত ছয়টি ছাড়াও কমপক্ষে ১০টি হাট বসেছে।
ক্রেতারা মনে করেছিলেন, বন্যার কারণে গরু, ছাগলের দাম কম পড়বে। কিন্তু তাঁদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, গত বছর যে পশু ৬০ হাজার টাকায় কেনা সম্ভব ছিল, তা এ বছর ৮০ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এবার সিলেটে কম পশু আসায় স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা বড় দাম হাঁকছেন। টুকেরবাজার পশুহাট পরিদর্শন করে স্থানীয় জাতের অনেক গরু-ছাগল দেখা যায়। কিন্তু হাটে ক্রেতার সংখ্যা কম। সি
লেটের অনেক এলাকা এখনও বন্যাকবলিত থাকায় ক্রেতারা বাজারমুখী হচ্ছেন না বলে জানান স্থানীয় ইজারাদার পক্ষের স্বেচ্ছাসেবক গফুর। তিনি জানান, শুক্র ও শনিবার ক্রেতাদের ওপর তাঁরা ভরসা করে আছেন। একটি ষাঁড় বাজারে নিয়ে আসা স্থানীয় ধনপুরের বাসিন্দা রজত আলী জানান, দুই বছর তিনি ষাঁড়টি পালন করেছেন। ৭০ হাজার টাকা দাম উঠেছে। ৮০ হাজার হলে বিক্রি করবেন।
কাজীরবাজার থেকে ৯০ হাজার টাকায় সাদা গরু নিয়ে ফিরছিলেন সুবিদবাজারের প্রবাসী পরিবারের সদস্য গাফ্ফার। তিনি জানান, গরুর দাম খুব বেশি।
সিলেট ডেইরি ফার্মস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সিটি কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান জানান, এবারের বাজার পরিস্থিতি অন্যরকম মনে হচ্ছে। পশু নিয়ে সবার মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। বাজারে চাহিদা অনুপাতে পশুর সংখ্যা অনেক কম। সিলেটে এবার দেড় লাখের মতো পশুর চাহিদা আছে। তিনি জানান, ক্রেতার উপস্থিতিও কম। শেষ দিকে বাজার জমে উঠতে পারে।
Leave a Reply