ডেস্কঃ কোম্পানীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন এর বিরুদ্ধে বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও জনহয়রানীর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এহেন অনৈতিক কর্মকান্ডে থানার মানুষজন অতিষ্ট হয়ে ওঠেছেন। উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করার পরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় জনক্ষোভ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কোন সময় এ ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
অভিযোগে প্রকাশ, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের কোয়ারী থেকে দীর্ঘদিন ধরে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ক্রাশার মিল ও কারখানা । বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় স্থানীয় শ্রমিকরা তাদের ক্রাশার মিলের নিচ থেকে পূর্বে উত্তোলিত চিপ ও মরা পাথর উত্তোলন খুড়ে তুলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু এতেও বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন। প্রতি ক্রাশার তলা থেকে তিনি জোরপূর্বক ২হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদা না দিলে দেখান মামলা গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে পিটুনীর ভয়। তাছাড়া চিপ বহনকারী গাড়ি ধরে আদায় করছেন গাড়িপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে।
উপজেলার কলাবাড়ী গ্রামের শামসুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আজ থেকে ৭/৮দিন আগে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন, এএসআই টিপু সুলতান পাড়ুয়া তেল পাম্পের কাছ থেকে তার একটা চিপ পাথরের গাড়ি আটক করে ৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাকে অন্য প্যান্ডিং মামলায় আসামী করে চালান ও রিমান্ড দেয়া হবে বরে ভয়-ভীতি দেখাতে থাকেন। এ সময় তার কাছে টাকা না থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি সদ্য বিবাহিত মেয়ের জামাই’র কাছ থেকে ৮হাজার টাকা এনে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিনকে দিয়ে কোনোমতে মুক্তি পান।
পরে তিনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও সার্কেল এএসপিকে বিষয়টি ফোন করে জানিয়েছেন। তারা দেখবেন বলে তাকে আশ্বাস দেন। কিন্তু আজোবধি বিষয়টি দেখা হয়নি বলে জানান তারা। অপর ব্যাবসায়ী সাইদুর রহমান সৈয়দ জানান, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন তার চিপ পাথরের গাড়ি ধলাই ব্রীজের উপর থেকে আটকিয়ে মামলা ও রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবী করেন। পরে তিনি অনেক রিকোয়েস্ট করে ১০০০/-(এক হাজার (টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। এভাবে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন উপজেলার পাড়ুয়া, কলাবাড়ী ও বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে নিয়েছেন ও নিচ্ছেন। বিষয়টি থানার ওসিকে জানালেও ওসি বা তার উর্ধতন কোনো কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না। ফলে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন সম্পূর্ণ বেপরোয়া হয়ে চাঁদাবাজিসহ জননির্যাতন করে চলেছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, আমার কাছে অভিযোগ আসলে আমি উর্ধতন কর্তপক্ষকে অবিহিত করি। ব্যবস্থা নেওয়ার মালিক উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বলে জানান তিনি।
গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গোয়াইনঘাট সার্কেল) প্রবাস কুমার সিংহ সাংবাদিদের কাছে এমন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনে মৌখিকভাবে তাকে শাসিয়েছি। আশা করি ভবিষ্যতে আর এ রকম হবেনা। পরবর্তীতে যদি এমন কাজ করে তাহলে আপনারা যা ইচ্ছা তা করেন আমার কোন আপত্তি নেই।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন চাঁদাবাজী আরো বেঁড়ে গেছে। এখন বিভিন্ন ক্রাশার মিলে গিয়ে গাড়ি আটকিয়ে প্রকাশ্যে চাঁদা চাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জনতে চাইলে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ উদ্দিন চাঁদাবাজি ও জননির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমান পেলে আপনারা লেখালেখি করতে পারেন।
Leave a Reply