1. admin@sylheterkujkhobor.com : admin :
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জালালাবাদ থানা রিকশা ও রিকশাভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের মে দিবস পালন দক্ষিণ সুরমা রেস্তোরা মালিক সমিতি’র জরুরী সভা অনুষ্ঠিত গরম থেকে বাঁচতে ট্রাফিক পুলিশদের এসি হেলমেট দিলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভায় শ্রমিকদের যথাযথ মুল্যায়নের দাবী দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাচনে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে জুয়েল আহমদ যারা কথায় কথায় স্যাংশনস দেয় তারা ঘরে ঢুকে মানুষ হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা ব্রিজের কাজ না করেই ১৫ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করে নিজাম এন্টারপ্রাইজ চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা, বিচার চাওয়ায় পিতার উপর হামলা

সিলেটে ভুয়া হিজড়ার ছড়াছড়ি প্রকাশ্যে বেড়েছে অপরাধ কর্মকাণ্ড

সিলেটের খোঁজখবর
  • আপডেট সময় : রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩
  • ১৪৮ বার পঠিত

জাবেদ এমরান: সপ্তাহের শেষদিন বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় হুমায়ূন রশিদ চত্বরের পুলিশ বক্সের সামন থেকে ল কলেজের সামন পর্যন্ত প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট ঠেলে শাহ্‌ জালাল ব্রিজের ওপর প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, জালালাবাদ গ্যাস অফিসের সামনে শহর অভিমুখী বরযাত্রীবাহী গাড়ীর বিশাল বহর আটকে রেখেছে তৃতীয় লিঙ্গের একটি দল। তাদের চাহিদামত চাঁদা না দেয়ায় বরের গাড়ীর সামনে জটলা বেঁধে দাঁড়িয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ফলে সময়ের ব্যবধানে যানজট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। যানজটে রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুলেন্সকেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। উৎসুক পথচারীর কেউ ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে চাইলে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করে মোবাইল ছিনিয়ে নিতে তেড়ে আসে।

এমন ঘটনা প্রতিদিন সিলেটের কোথাও না কোথাও ঘটছে একাধিক সংঘবদ্ধ চক্রের সহযোগীতায় দিনে দুপুরে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে চলে চাঁদাবাজিসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ড। কমিশনের লোভে চক্রের সদস্যরা নগরীর বাসা-বাড়ি ও কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে সহ সামাজিক অনুষ্ঠানের খবর মোবাইলে জানিয়ে দিচ্ছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে পৌছে বকশিসের অজুহাতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ঘটনা বেড়েই চলেছে। সিএনজি অটোরিকশা চালক, কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন দোকানদার সহ নানা মাধ্যম থেকে মুঠোফোনে সামাজিক অনুষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করে সেখানে উপস্থিত হয় হিজড়ার দল।

প্রতিমাসে নগরের সব ধরণের দোকানে দল বেঁধে হানা দিয়ে মাসিক চাঁদা তুলা অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন গ্রুপের তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা। চাঁদা না পেলে আগত ক্রেতা ও দোকানির সামনে একসাথে সবাই হাতে তালি দিয়ে নিজেদের পড়নের কাপড় খোলার ভয় দেখিয়ে আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। ছাড় পাচ্ছেনা রেলে যাতায়াতকারীরা ও ফুটপাতের দোকানদাররাও। পঞ্চাশ কেজি চালের প্লাস্টিকের বস্তা ধরে দুজন সামনে হাটে আর অন্যান্য সদস্যরা কিছু না বলে ফল, সবজি, পেঁয়াজ সহ যা দেখছে দু-চার-ছয়টা করে বস্তায় ভরে চলে যাচ্ছে। চক্ষুলজ্জা ও মানসম্মানের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ বা তাদের প্রতিহত না করায় নির্ভয়ে ইচ্ছে মত লুটতরাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

সিলেট শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিয়ের গাড়ির অপেক্ষায় ওঁত পেতে হিজড়াদের বসে থাকতে দেখা যায়। গাড়ি বহর দেখামাত্র জীবনের মায়া ত্যাগ করে তারা হুমরি খেয়ে সামনে পরে গাড়ি থামাতে বাধ্য করে। এতে করে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়াও শহরের বাহিরে সিলেটের পর্যটন স্পট বিছানাকান্দি, সাদাপাথর জাফলং এ বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে সেখানেও হিজড়ারা সক্রিয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সম্প্রতি সাদাপাথর গাড়ি পার্কিং স্থলে এক হিজড়া সদস্য বলে, প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা সিলেটের সুন্দরী হিজড়াকে দিয়ে তারা বকশিস কালেকশন করছে। চাঁদাকে তারা বকশিস বলে প্রচার করে।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে এদের অধিকাংশ ভুয়া ও রূপান্তরিত হিজড়া। প্রতারণা ও চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে হিজড়ার ছদ্মবেশ ধারণ করে অনেকে লাখপতি কেউবা কোটিপতি বনে গেছে। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে অনেকে রূপান্তরিত হয়ে কেউ আবার ছদ্মবেশ ধারণ করে হিজড়া হিসেবে চাঁদাবাজি করছে। শহরে হিজড়াদের ১৫ থেকে ২৫ টি গ্রুপ রয়েছে। প্রত্যেক গ্রুপের নির্দিষ্ট এলাকায় সীমানা ভাগ করা আছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব হিজড়াদের নেতৃত্ব দিচ্ছে রানা হিজড়া, সুন্দরী হিজড়া, রাণী মুখার্জী হিজড়া ও কালি হিজড়া সহ নামে বেনামে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা।

জানা যায়, ২০১৮ সালে কদমতলীর বহুতল ভবন কুইন্স টাওয়ারে ফ্লাট কিনে বসবাস করছে সুন্দরী হিজড়া। সেখান থেকে সুদের ব্যবসা ও হিজড়াদের প্রায় সব কটি গ্রুপ পরিচালনা করছে। হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্বে সুন্দরী থাকলেও কোনো হিজড়ার কল্যাণ হয়েছে বলে জানা যায়নি।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে সরকার ও বিভিন্ন চ্যারিটি সংগঠন বিভিন্ন সময় উপঢৌকন, প্রণোদনা, আর্থিক সহযোগিতা করার পাশাপাশি আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেয়।

বিগতদিনে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগীতায় সুন্দরী হিজড়ার মাধ্যমে আটটি আধুনিক চটপটি বিক্রির ভ্যান গাড়ী দেয়া হয়। কিছুদিন পর সে গাড়ির হদিস পাওয়া যায় নি।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সুবহানীঘাট থেকে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য তুষার আহমদের লাশ উদ্ধার হয়। তুষারের বড় ভাই হিমেল আহমদ রাফি জানায়, তার ছোটভাই নারী ছদ্মবেশে হিজড়াদের সাথে মিশে চলাফেরা করতো। সে প্রকৃত হিজড়া নয়। টাকার নেশায় তুষারের মত যুবকরা হিজড়া সেজে জড়িয়ে পরছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে।

অভিযোগ আছে, দক্ষিণ সুরমার এক অংশের নেতৃত্বদানকারী রানা হিজড়া প্রকৃতপক্ষে একজন পুরুষ। তার ঘর-সংসার, বউ-বাচ্চা রয়েছে।

হিজড়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি সুন্দরী হিজড়া বলেন, ভুয়া হিজড়াদের বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার রয়েছেন। এদের প্রতিহত করতে সাংবাদিক সহ সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে তিনি আহবান জানান।

সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. ইলিয়াস শরীফ বিপিএম (বার)-পিপিএম দৈনিক সিলেট বাণীকে বলেন, জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের সমন্বয়ে এব্যাপার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। যারা হিজড়া সেজে প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হব




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর










x