1. admin@sylheterkujkhobor.com : admin :
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ব্রিজের কাজ না করেই ১৫ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করে নিজাম এন্টারপ্রাইজ চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা, বিচার চাওয়ায় পিতার উপর হামলা দক্ষিণ সুরমা হোটেল-রেস্তোরা মালিক সমিতি’র নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলেন বাউল পাগল হাসান আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম শায়েস্তার প্রার্থিতা বাতিল তামাবিল স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ২ দিন বন্ধ থাকবে নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রকাশ্যে ইউপি সদস্যকে গুলির পর গলা কেটে হত্যা ১৪৩১ কে স্বাগত জানিয়ে বর্নিল আয়োজনে সিলেটে নববর্ষ উদযাপন পর্তুগালে নানান আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন।

১৪৩১ কে স্বাগত জানিয়ে বর্নিল আয়োজনে সিলেটে নববর্ষ উদযাপন

সিলেটের খোঁজখবর
  • আপডেট সময় : সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৪৫ বার পঠিত

বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ। সুদীর্ঘকাল থেকে পহেলা বৈশাখ বাঙালির এই উৎসব উদযাপন হয়ে আসছে। এদিনে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলা নববর্ষের উৎসবে মাতোয়ারা হয়। গলা মেলায় রবি ঠাকুরের অমর গান- ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’র সুরে।
বাঙালির এই প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ভারতবর্ষে মোগল সাম্রাজ্য পরিচালিত হতো হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে। আর হিজরী পঞ্জিকা চাঁদের উপর নির্ভরশীল। যেহেতু কৃষকদের কৃষিকাজ চাঁদের হিসেবের সাথে মিলতো না, তাই তাদের অসময়ে খাজনা দেয়ার সমস্যায় পড়তে হতো। সে কারণে খাজনা আদায়ে কৃষকদের যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সম্রাট আকবর বর্ষপঞ্জীতে সংস্কার আনেন। তখনকার বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ও বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাবিদ ফতেহউল্লাহ সিরাজী সম্রাট আকবরের আদেশে সৌর সন ও চন্দ্র সনের উপর ভিত্তি করে বাংলা সনের নিয়ম তৈরি করেন। ১৫৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ বা ১১ মার্চ থেকে প্রথম বাংলা সন গণনা করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবেই খাজনা আদায়ে এই গণনা কার্যকর শুরু হয়েছিল ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকে।
পূর্বে ফসল কাটা ও খাজনা আদায়ের জন্য এই বছরের নাম দেয়া হয়েছিলো ফসলি সন। পরে তা বঙ্গাব্দ আর বাংলা সন করা হয়। তখন চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে খাজনা, শুল্ক দিতে হতো কৃষকদের। তাই তখন থেকেই সম্রাট আকবর কৃষকদের জন্য মিষ্টি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। হালখাতার প্রচলনও সম্রাট আকবরের সময় থেকেই ব্যবসায়ীরা করেছেন।
আর বর্তমানের বাংলা সন এসেছে গ্রেগরিয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে। বাংলাদেশে এই গ্রেগরিয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল শুভ নববর্ষ পালন করা হয়। ১৯৮৯ সাল থেকেই মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের একটি প্রধান আকর্ষণ।
উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালে ইউনেস্কো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে আয়োজিত যে মঙ্গল শোভাযাত্রার বের করে, সেটিকে “মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশে নববর্ষ ১৪ এপ্রিল পালিত হলেও পশ্চিমবঙ্গে তা ১৫ এপ্রিল পালন করা হয়। কারণ, ভারতে সনাতন সম্প্রদায় তিথী পঞ্জিকা অনুসরণ করে থাকে। বাংলাদেশে আধুনিক বাংলা বর্ষ পঞ্জিকায় গ্রেগরিয় পঞ্জিকা অনুসারে বাংলা একাডেমি কর্তৃক ১৪ এপ্রিল বাংলা বছরের প্রথম দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
এদিকে, সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও বাংলা নববর্ষ উদযাপনে সরকারি ও বেসরকারিভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
১৪ এপ্রিল রোববার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাংলা নববর্ষ বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতির এ উৎসব পালনে একটি অপশক্তি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রাকেও নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে সব কিছু মোকাবেলা করেছেন। এখন আর কোনো অপশক্তি বাংলার সার্বজনিন উৎসবে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছিলেন। নতুন বছরে এদেশ থেকে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিকে নস্যাৎ করে সেই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কোনো অপশক্তিই উৎসবে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

এদিকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে নগরির বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আ’লীগ, বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতীকী উপস্থাপন করা হয়।
শোভাযাত্রা শেষে অডিটোরিয়ামের মুক্তমঞ্চে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী দেবজিৎ কুমার সিনহা।
অন্যদিকে, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সিলেট সিটি করপোরেশন। এরমধ্যে ছিল র‍্যালি ও আলোচনা সভা। সকাল ১০টায় সিসিকের পক্ষ থেকে নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
অপরদিকে নববর্ষ উপলক্ষে শ্রীহট্র সংস্কৃত কলেজে আনন্দলোক, ব্লুবার্ড স্কুলে শ্রুতি নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এছাড়াও, এ উপলক্ষে ৭দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে ক্বিনব্রিজের নিচে আলী আমজাদের ঘড়িঘরের সামনে। বিকেল ৩টায় এই মেলার উদ্বোধন করেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রশাসনঃ সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় উৎসবমুখর পরিবেশে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে। ১৪ এপ্রিল রোববার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। বর্ণিল সাজে সেজে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

এরপর উপজেলা অডিটরিয়ামে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মৌসুমী পালের উপস্থাপনায় এতে মনোজ্ঞ সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে উপজেলা সাংস্কৃতিক দল।
দক্ষিণ সুরমার ইউএনও ঊর্মি রায়ের সভাপতিত্বে ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমসি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সজিব দে, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাখন চন্দ্র সুত্রধর, দাউদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুল হক আতিক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাঁধন কান্তি সরকার, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাব, সিলেট’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, রেবতী রমন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তিসেন সামন্ত, সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম ইমরানসহ উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর










x