1. admin@sylheterkujkhobor.com : admin :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন

প্রবাস আয়ে বিশ্বে সপ্তম বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

সিলেটের খোঁজখবর
  • আপডেট সময় : বুধবার, ১৫ জুন, ২০২২
  • ১৩৬ বার পঠিত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম উচ্চ রেমিট্যান্স অর্জনকারী দেশ। ২০১৯-২০ অর্থ-বছরে রেমিট্যান্স হিসেবে ১৮.২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত হয় এবং ২০২০- ২১ অর্থ-বছরে এটি রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৪.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে যা পূর্ববর্তী অর্থ-বছরের তুলনায় ৩৬.১০ শতাংশ বেশি। সেই সুবাদে প্রবাস আয় প্রাপ্তিতে বিশ্বে সপ্তম স্থান অধিকার করে বাংলাদেশ।

পিরোজপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বুধবার সংসদে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থ-বছরে রেমিট্যান্স কিছুটা হ্রাস পেয়েছে এবং জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ১৭.৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থ-বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬.২৫ শতাংশ কম। বিগত ২০১৯-২০, ২০১৮-২০১৯ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থ-বছরের প্রথম ১০ মাসের রেমিট্যান্সের গড় ছিল ১৩.৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কোভিড পূর্ববর্তী তিন বছরের প্রথম ১০ মাসে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের গড় অপেক্ষা ২০২১-২২ অর্থ-বছরের প্রথম ১০ মাসে প্রাপ্ত প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮.৯১ শতাংশ বেশি। কাজেই, চলতি অর্থ-বছরে রেমিট্যান্স হ্রাস পেয়েছে, না বলে বলা যেতে পারে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কোভিড পূর্ববর্তী স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। অন্যদিকে, ২০২০-২১ অর্থ-বছরে কোভিড অতিমারির সময় প্রবাস আয়ে অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছিল।

তিনি বলেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থ-বছরে বিগত ২০২০-২১ অর্থ-বছরের তুলনায় প্রবাস আয় হ্রাসের কারণসমূহ হচ্ছে ২০২০-২১ অর্থ-বছরে শুরুতে কোভিড অতিমারিতে প্রবাসীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তা থেকে তাদের জমানো টাকা দেশে পাঠিয়েছিলেন। অনেকে চাকরি হারিয়ে কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে সব অর্থ দেশে নিয়ে এসেছেন। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। অনেক প্রবাসী নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশের অর্থনীতি কোভিড-১৯ অতিমারিকে সফলভাবে মোকাবেলা করে স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসলেও বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগকারী প্রধান প্রধান দেশের অর্থনীতিসমূহ এখনও স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসেনি। ফলে উক্ত দেশসমূহে কর্মরত বাংলাদেশী কর্মীদের প্রবাস আয় তুলনামূলকভাবে কম থাকায় রেমিট্যান্স প্রেরণ কম হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে ।

সংসদ নেতা বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ-যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে। ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরেও অর্থের লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হচ্ছে।

জনশক্তি রফতানি বৃদ্ধি ও বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ানো সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

জনশক্তি রফতানি বৃদ্ধি ও বৈধ পথে প্রবাস আয় প্রেরণকে আকর্ষণীয় করে তোলার মাধ্যমে পুনরায় রেমিট্যান্স প্রবাহ জোরদার করতে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনাসমূহের মধ্যে বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৭০টি দেশে ১ কোটি ২০ লাখের অধিক কর্মী কর্মরত আছে।

সরকার বিদেশগামী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসন ও সম্মানজনক পেশা নিশ্চিতকরণের উপর গুরুত্বারোপ করছে। কোভিড-১৯ অতিমারির চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় সরকার নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানে সচেষ্টরয়েছে ।বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ অনুযায়ী প্রতি করা হয়েছে। অভিবাসনে পিছিয়ে পড়া দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সকল উপজেলা হতে প্রতি বছর গড়ে ১ হাজার কর্মী প্রেরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ উপজেলা থেকে অধিক হারে অভিবাসনে উৎসাহী করার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

এছাড়া বিদেশগামী প্রত্যেক কর্মীকে মাইক্রো চিপস সম্বলিত স্মার্ট কার্ড/বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদান করা হচ্ছে। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে ভিসা যাচাই (সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, বাহারাইন, কাতার, মালয়েশিয়া ও ওমান) উদ্ভাবনের ফলে বিদেশগামী কর্মীগণ সহজেই ভিসা যাচাই করতে পারছেন এবং হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতি হতে নিরাপদ থাকছেন। অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের কার্যক্রম তদারকি করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক যুগে বিদেশস্থ মিশনে শ্রম কল্যাণ উইং এর সংখ্যা ১২টি থেকে ২৯টিতে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই উইংসমূহ নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি ও বিদ্যমান শ্রমবাজারের সম্প্রসারণ, বিদেশে নিয়োগকর্তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, অভিবাসী কর্মীদের কর্মপরিবেশ, সুবিধা ও সমস্যাবলী সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ, অভিবাসী কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও মামলাসমূহ পরিচালনায়

আইনগত সহায়তা প্রদান, বিদেশে কারাদণ্ড প্রাপ্ত/কারাভোগরত কর্মীদের আইনানুগ সহায়তা প্রদান, বিদেশে আটককৃত বা বিপদগ্রস্ত কর্মীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা প্রদানসহ অভিবাসী কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ।এ সকল উদ্যোগের ফলে করোনা পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও প্রবাস নিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারি সত্ত্বেও দুই লক্ষ সতের হাজার ছয়শত ঊনসত্তর জন বাংলাদেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম। ৪ মাসে ৪ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৫৮ জন প্রবাস নিয়োগ করা হয়েছে। এ বছরের অবশিষ্ট সময়ে প্রবাস নিয়োগের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে। ফলে, আগামীতে মিট্যান্স উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে ।

বৈধ পন্থায় রেমিট্যান্স প্রেরণকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার ২০১৯ অর্থ-বছর হতে প্রেরিত প্রবাস আয়ের উপর ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা প্রদান করছে এবং ২০২১-২২ অর্থ-বছরে উক্ত নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২.৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। আগামী অর্থ-বছরেও এখাতে ২.৫ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনাসহ প্রণোদনা প্রদানের প্রক্রিয়া সহজীকরণে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ অব্যাহত রাখা হবে ; পূর্বে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলারের অধিক রেমিট্যান্স প্রেরণের ক্ষেত্রে নগদ প্রণোদনা প্রাপ্তির জন্য প্রবাস আয় প্রেরণকারীর কাগজ পত্রাদি (যেমন- পাসপোর্ট, নিয়োগপত্র বা ব্যবসায় লাইসেন্স এর কপি) বিদেশস্থ এক্সচেঞ্জ হাউজ হতে প্রেরণের বাধ্যবাধকতা ছিল।

সরকার এই বাধ্যবাধকতা তুলে দিয়েছে। ফলে বৈধ উপায়ে দেশে যে কোনও পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে নগদ প্রণোদনা প্রাপ্তির জন্য রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর কোন ধরনের কাগজপত্র প্রদান করতে হবে না। রেমিটেন্স প্রেরণ সহজীকরণের লক্ষ্যেপ্রত্যন্ত অঞ্চলে এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে রেমিটেন্স প্রেরণ উৎসাহিত হচ্ছে।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর










x