সিলেট নগরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিলো রাস্তায় থাকবে না কোন যাটজট, ফুটপাত থাকবে হকার মুক্ত। তবে দিন যায়, মাস আসে, মাস যায় আসে বছর কিন্তু সমাধান হয় না এসব সমস্যার। মেয়র কামরান থেকে মেয়র আরিফ। দীর্ঘ ২০ বছর যে আপেক্ষ ছিলো নগরবাসীর সেটি এখন মুচন হচ্ছে! আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার ছয়মাসের মাথায় নগরীর রাস্তা যাটজট ও হকার মুক্ত হচ্ছে। রাস্তা-ফুটপাতে হকার দেখলেই এখন উচ্ছেদ করছে পুলিশ। এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন নগরবাসী।
রোববার (১০ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরীর বন্দরবাজার ও জিন্দাবাজার এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করছে সিলেট মহানগর পুলিশ। ফুটপাতজুড়ে বসা অবৈধ হকারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এতে যানজট কমে আসছে অনেকটা। এরআগে সকালে নগরভবন-সংলগ্ন নগরীর লালদিঘির পাড় মাঠে হকার পুনবার্সন কার্যক্রম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ কাজের উদ্বোধন করেছেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এর আগে তিনি এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, এবারের রমজানের আগেই সিলেট মহানগরের রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। তবে তার এসব কাজ পুরোপুরো বাস্তবায়ন নিয়ে নাগরিক মনে কিছুটা সংশয় রয়েছে। সিসিক সূত্র জানিয়েছে, লালদিঘির পাড় মাঠে প্রায় সাড়ে ৪ একর জায়গা নিয়ে হতে যাওয়া এই মাকের্টে থাকবে প্রায় আড়াই হাজার দোকানঘর।
সেখানেই সিলেট মহানগরের ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা (হকার) থাকবেন। প্রত্যেক হকারের জন্য ৭ ফুট/৩ ফুট জায়গা বরাদ্ধ দেয়া হবে। মাঠটিতে ইতোমধ্যে মাটি ভরাট করা হয়েছে। কাদা-পানি যাতে না জমে এ জন্য ইট ও বালু ফেলা হয়েছে। তৈরি করা হবে গলি। শেড তৈরি করে দোকানকোটাগুলো ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হবে। ঈদের আগেই এ কাজ সম্পন্ন হবে। লালদিঘির পাড় মাঠে আড়াই থেকে ৩ হাজার হাকারকে পুনর্বাসন করা হবে। রবিবার সকালে পুনর্বাসন কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিসিক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ছোট ছোট ব্যবসা করে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-যাপন করেন। তারা চুরি-ডাকাতি করেন না। এজন্য তাদেরকে সম্মানের চোখে দেখতে হবে। তারাও আমাদের সমাজের একজন। ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, ক্রেতাদের সাথে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে তাদের মন জয় করতে হবে, তবেই এখানে ক্রেতারা আসবে।
ক্রেতারা আসলে ব্যবসা ভালো হবে। পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে পারবেন। উদ্বোধন শেষে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী পুরো মাঠ পরিদর্শন এবং কয়েকটি দোকান থেকে কিছু কেনাকাটাও করেন। প্রসঙ্গত- প্রতিদিনই সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মহানগরের প্রাণকেন্দ্র বন্দরবাজার-জিন্দাবাজার-চৌহাট্টার বিভিন্ন সড়কে ফুটপাত ছাড়িয়ে সড়কের অর্ধেকেরও বেশি অংশ হকারদের দখলে থাকতো। ভ্রাম্যমাণ কাপড় বিক্রেতা ছাড়াও মাছ ও সবজি বিক্রেতারাও বসতেন সড়ক-ফুটপাতে। খোদ নগরভবনের সামনের অংশ সবজি ও মাছ বিক্রেতারা দখল করে রাখরতেন প্রতিদিন। রাতের বেলা বিদ্যুতের আলোরও সুবিধা পেতেন এসব অবৈধ ব্যবসায়ী।
Leave a Reply